করোনা সংক্রমণের ১ বছর পূর্ণ হয়েছে আজ। গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। করোনায় গত এক বছরে আমরা বিশিষ্ট ব্যক্তি, মন্ত্রিসভার সাবেক সদস্য, সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ, প্রথিতযশা শিক্ষক, চিকিৎসক, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, র্যাব-পুলিশ সদস্য, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, নার্সসহ বিভিন্ন পেশাজীবীকে হারিয়েছি।
ছবিঃ সংগৃহীত
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম জানান, স্বাস্থ্যবিধি না মানায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। আইসিইউ বেডের চাহিদাও বেড়েছে কয়েক দিন ধরে। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে পর্যটনকেন্দ্রগুলো খোলা থাকায় এবং মানুষের ভিড় বাড়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি টানা তিন দিনের ছুটিতে অনেকে পরিবারসহ কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, সিলেট, কুয়াকাটাসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় গেছেন। তাদের অনেকেই মাস্ক পরেননি, হোটেল সিট না পেয়ে যেখানে-সেখানে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে থেকেছেন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে এ ধরনের লোকের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দিন ধরেই আইসিইউর জন্য তদবির আসছে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা আরো বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, করোনা আমাদের দেশে এখনো নির্মূল হয়নি। তাই এই ভাইরাস নিয়ে তামাশা করা যাবে না।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, দেশে করোনার সংক্রমণ শুরুর দিকে রোগী শনাক্তের হার কম ছিল। গত বছরের মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত রোগী শনাক্তের হার ২০ শতাংশের ওপরে ছিল। মাস দুয়েক সংক্রমণ নিম্নমুখী থাকার পর গত নভেম্বরের শুরুর দিক থেকে নতুন রোগী ও শনাক্তের হারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়। ডিসেম্বর থেকে সংক্রমণ আবার কমতে শুরু করে। গত মাসের শেষ দিন, অর্থাত্ ২৮ ফেব্রুয়ারি দেশে দৈনিক করোনা শনাক্তের হার ছিল ২ দশমিক ৮৭ শতাংশ। কিন্তু মার্চের শুরু থেকে আবারও দৈনিক শনাক্তের হার ঊর্ধ্বমুখী হয়ে শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ।
এক বছরের মাথায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে ৫ লাখ ছাড়িয়ে গেল। গতকাল রবিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৬০৬ রোগী শনাক্ত হয়েছে দেশে; তাতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ৫ লাখ ৫০ হাজার ৩৩০ জনে। আর গত এক দিনে এ ভাইরাসে আরো ১১ জনের মৃত্যু হওয়ায় মৃতের মোট সংখ্যা পৌঁছছে ৮ হাজার ৪৬২ জনে।