অতপর রাতের আঁধারে প্রশাসনের লোকজন ত্রাণ নিয়ে ওই দুই ব্যাক্তির বাড়িতে হাজির হলে কোনো ত্রাণসামগ্রীর প্রয়োজন নেই, তারা মজা করে ফোন দিয়েছেন বলে জানান।এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ওই দুই ব্যক্তিকে ২৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ঘটনাটি গত সোমবার রাতে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার বিশকাকুনি ইউনিয়নের ধোবারুহি গ্রামে ঘটে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ধোবারুহি গ্রামের অধিবাসী মো. হারুন অর রশিদ (৫৫) ও মো. আবুল বাশার (৩৮)। তাদের মধ্যে একজন ঠিকাদার ও অন্যজন আবুল বাশার ব্যবসায়ী।
স্থানীয় বাসিন্দা ও আদালত সংশ্লিষ্টদের বরাত দিয়ে জানা যায়, ওই দুই ব্যক্তি করোনাভাইরাসের কারণে বাইরে যেতে পারছেন না। কাজ-কর্ম না থাকায় ঘরে খাবারও নেই বলে গত সোমবার সন্ধ্যায় সরকারি জরুরি সাহায্য সেবা ৩৩৩ নম্বরে ফোন দিয়ে সাহায্য চাইলে বিষয়টি নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলামকে জানানো হয়।
জেলা প্রশাসক সঙ্গে সঙ্গে পূর্বধলা উপজেলা ইউএনও উম্মে কুলসুমকে ওই দুই ব্যক্তির ঘরে প্রয়োজনীয় খাবার পৌঁছে দেয়ার নির্দেশ দেন। অতপর রাত ৮টায় ত্রাণসামগ্রী নিয়ে পূর্বধলা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরিন বেগম সেতু ও থানার ওসি মোহাম্মদ তাওহীদুর রহমানকে নিয়ে পাশাপাশি ওই দুই বাড়িতে যান।
পরে তারা জানান, খাবারের কোনো অভাব নেই। মজা করে ৩৩৩ নম্বরে ফোন করেছিলেন।
তাদের খামখেয়ালিপনার অপরাধে এ সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) ভ্রাম্যমাণ আদালত বসান। আদালতে ওই দুই ব্যক্তি দোষ স্বীকার করেন। পরে আদালত ত্রাণ কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করার অপরাধে হারুন অর রশিদকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১৫ দিনের জেল এবং আবুল বাশারকে ৩ হাজার টাকা অনাদায়ে তিন দিনের জেল ঘোষণা করেন।পরে তারা টাকা দিয়ে মুক্তি লাভ করেন।
পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে কুলসুম জানান, ‘সরকারি ত্রাণ নিম্ন আয়ের ও খেটে খাওয়া মানুষের জন্য যাদের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। অথচ হারুন অর রশিদ পেশায় একজন ঠিকাদার। অপর জন ব্যবসায়ী। তাদের ঘরে যথেষ্ট খাবার মজুদ রয়েছে এবং ত্রাণের প্রয়োজন নেই। মজা করে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে তারা এই কাজ করেছিলেন বিধায় আদালত তাদের দণ্ড প্রদান করেন।